ই-পেপার

পার্বত্য শান্তিচুক্তির দুই যুগপূর্তি: বরিশালে সর্ববৃহৎ উৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: December 2, 2021

অশান্ত চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে যেন রক্তের হলি চলছিল। বাংলাদেশ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও তার সশস্ত্র উগ্র অঙ্গ-সংগঠন শান্তি বাহিনীর মাধ্যমে এই সংঘাতের সৃষ্টি করেছিলেন। অতঃপর সেই সংঘাত আর রক্তের হলি খেলা বন্ধ হয় ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর এক শান্তিচুক্তির মাধ্যমে।

তৎকালিন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ- এমপি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পক্ষ্যে সন্তু লারমা এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। সেই পার্বত্য শান্তিচুক্তির দুই যুগ পূর্তি আজ ২ ডিসেম্বর।

এদিকে, শান্তিচুক্তির অগ্রনায়ক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বরিশাল অঞ্চলের গর্ব। তিনি শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ণ কমিটির মন্ত্রী মর্যাদায় আহ্বায়ক। এ কারণেই প্রতি বছর দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বরিশাল অঞ্চলে ঘটাকরে পালিত হয় পার্বত্য শান্তিচুক্তি দিবস। এবারের আয়োজনেও কমতি নেই কোন অংশে।

গত তিন দিন ধরে বিভাগের হেটকোয়ার্টার বরিশাল নগরীতে চলছে পার্বত্য শান্তিচুক্তি’র দুই যুগ পূর্তি উৎসবের আয়োজন। যার নেতৃত্বে আছেন বরিশাল সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।

অপরদিকে, এবারের শান্তিচুক্তি দিবসকে ঘিরে বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছে বরিশাল মহানগরী। বিশেষ করে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র এ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন এর নির্মিত পার্বত্য অঞ্চলের দৃশ্যপট আর প্রতীকি পদ্মা সেতু নজর কেড়েছে নগরবাসির।

নগরীর নাজিরের পুল সংলগ্নে দুষ্টিনন্দন এই প্রতীকি পদ্মা সেতু, দুটি পাহার এবং এর পেছনে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পাহারী পার্বত্য অঞ্চল। সেখানে শোভা পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের সেই দৃশ্যটিও। আর এই সৌন্দর্য এক নজর দেখতে ভীর জমাচ্ছে শত শত মানুষ।

এছাড়া দলীয় কার্যালয়, শহীধ সোহেল চত্বর এবং বিবির পুকুরের চারপাশ এবং সদর রোড এলাকা তোড়ন, ব্যানার আর রং-বেরংয়ের আলোকসজ্জা করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০২০ সালে পার্বত্য শান্তিচুক্তি দিবসের অনুষ্ঠানে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মহামারী করোনা। তাই এক বছর পরে শান্তিচুক্তির দুই বছর পূর্তি অনুষ্ঠান বিগত বছরগুলোর থেকেও ব্যতিক্রম করা হয়েছে। সমাবেশের জন্য বিশাল মঞ্চ সাজানো হয়েছে নগর ভবন সংলগ্ন ফজলুল হক এভিনিউ সড়কে সিটি কর্পোরেশন চত্তরে। অনুষ্ঠানে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে বলে আশাবাদী আয়োজকরা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম। উদ্বোধন করবেন বরিশাল সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.কে.এম জাহাঙ্গীর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম রাব্বানী চিনু, আনিসুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

এদিকে, ‘সম্মেলন শুরুর আগে ২ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় শহীদ সোহেল চত্বরে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। এছাড়া বিকালে সমাবেশ পরবর্তী নগরজুড়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালি করবে আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন।

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.কে.এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমরা আশা করছি এটি বরিশালের সর্বোবৃহৎ একটি উৎসবমুখর সভা হবে। এ আয়োজন নিয়ে শহরের আনাচে কানাচে আলোচনা চলছে। আমাদের নেতৃবৃন্দরা বিভিন্ন স্থানে প্রস্তুতিমূলক সভা করেছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে মহানগর আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘কত লোক হবে সেটা আগেই বলা মুশকিল। তবে এতটুকু বলতে পারি পার্বত্য শান্তিচুক্তি’র দুই যুগ পূর্তি অনুষ্ঠানকে ঘিরে শহরের চারপাশ লোকে ফরে যাবে। আর সকলের অংশগ্রহণে শতস্ফুর্ত এবং শান্তিপূর্ণভাবে এই উৎসব পালন হবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন