ই-পেপার

ঘুম ভাঙল বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: November 18, 2021

চলতি বছরের গত ৯ সেপ্টেম্বর ‘শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে স্বমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় বরিশাল নগরীর তিনটি জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকাকে নিরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। দুই বছর মেয়াদী এই প্রকল্প বাস্তবায়ণে লোক দেখানো লিফলেট বিতরণ আর সাইনবোর্ড স্থাপনেই সীমাবদ্ধ ছিল দপ্তরটি। এ নিয়ে প্রচারাভিজানের পাশাপাশি নিরব এলাকা বাস্তবায়ণে আইন প্রয়োগের নির্দেশনা কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়।

তবে ঘোষণার প্রায় দুই মাস পরে অবশেষে ঘুম ভেঙেছে পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় কর্তৃপক্ষের। সম্প্রতি নিরব এলাকা বাস্তবায়ণে লোকদেখানো উদ্যোগ নিয়ে বিএসএল নিউজ সংবাদ প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসেন তারা। নিরব এলাকা বাস্তবায়ণে প্রশাসন এবং সড়ক ও নৌ পরিবহন শ্রমিকদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা করেছেন তারা।

এ কর্মশালার মাধ্যমে পূর্ব ঘোষিত নগরীর তিনটি নিরব এলাকায় কঠোরভাবে বাস্তবায়ণে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এলাকা তিনটি হলো- শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর (জেনারেল) হাসপাতাল ও অমৃত লাল দে সড়কে শহীদ অ্যাডভোকেট আব্দুর রব সেরনিয়াবাত আইন মহাবিদ্যালয় এলাকা।

এসব এলাকায় উঁচ্চ শব্দে হাইড্রোলিক হর্ন না বাজানোর বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শ্রমিকরা। প্রতিশ্রুতির ব্যত্যয় ঘটলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের হুশিয়ারী দেয়া হয়েছে প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে।

১৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বরিশাল জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের হলরুমে জনসচেতনতামূলক এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সভায় স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক আবদুল হালিম মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাহান হোসেন, বিআরটিএ’র উপ-পরিচালক জিয়াউর রহমান, পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান সরকার, সহকারী পরিচালক তোতা মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় জানানো হয়, ‘শব্দদূষণ (নয়িন্ত্রণ) বধিমিালা, ২০০৬ অনুসারে নরিব এলাকায় যানবাহনে চলাচলকালে র্হণ বাজানো নষিধে, দণ্ডনীয় অপরাধ এবং এর সাথে অর্থদণ্ড হতে পারে।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, ‘পাশাপাশি শব্দদূষণের ফলে শ্রবণশক্তি হ্রাস ও স্থানীভাবে নষ্ট হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ ও ফুসফুসজনিত জটিলতা, ক্ষুধামন্দা, হৃদরোগ, মস্তিস্ক বিকৃতি, অনিদ্রা ও স্মরণশক্তি হ্রাস পায় শব্দ দূষেণের কারণে।

এসময় কর্মশালায় বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, ‘হাসপাতাল, বিদ্যালয় এবং আবাসিক এলাকা হতে সকল ধরণের শব্দ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অপসারণ করা উচিত। এতে ওইসব এলাকায় শব্দ দূষণ রোধ করা সম্ভব হবে।

অপরদিকে, বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মোটরযানে হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহার অনুচিত। একবার হর্ণ চাপলে ১২০ ডেসিবল শব্দ তৈরি হয়। স্বাভাবিকভাবে একজন মানুষের ৬০ ডেসিবল শব্দ গ্রহণ করার ক্ষমতা রয়েছে বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট।

এই আইন অমান্যকারীদের জন্য এক মাসের কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে বলে জানানো হয়। পরবর্তী অপরাধের জন্য অনধিক ছয় মাস কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন