ই-পেপার

ইসি গঠন আইন: সংসদে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যে বিএনপির বিরোধিতা

বিএসএল নিউজ ডেস্ক | আপডেট: January 23, 2022

অবশেষে স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সংসদে উঠল নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি স্বতন্ত্র আইন প্রণয়নের প্রস্তাব। তবে সংসদে উত্থাপনের সময় বিরোধিতা করেছে বিএনপির সংসদ সদস্যরা।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

নিয়ম অনুযায়ী এই বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে। কিন্তু আইনটি উত্থাপনের পরপরই এর বিরোধিতা করেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা। তাদের দাবি, এই আইনে হবে না সুখকর কিছু! রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের যে প্রত্যাশা, তা এই আইনটির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।

আইনমন্ত্রী নতুন এই আইনটি নিয়ে চুলচেরা বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, এখানে জবাবদিহির সর্বোচ্চ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নেপাল, ভুটান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি ইংল্যান্ডের মতো দেশের এ রকম স্বচ্ছভাবে নির্বাচন কমিশন নিয়োগের ব্যাপার নেই।

যথাযথ পথ অনুসরণ করেই আইনটি সংসদ পর্যন্ত এসেছে বলেও দাবি তার। আইনমন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি) বলেছিলেন, সংসদকে পাস কাটিয়ে অর্ডিন্যান্স করে এই আইন করে দিতে হবে। আমি তখন বলেছিলাম, এই আইনটা সংসদে না এনে যদি অর্ডিন্যান্স দ্বারা হয়, তবে তা ঠিক হবে না। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সংসদে এটা করা উচিত হবে।

এর আগে আইনটির বিরোধিতা করে ফ্লোরে কথা বলেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ। তার জবাবও দেন আনিসুল হক।

হারুন অর রশিদ বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে যে যা লাউ, তা-ই কদু। আমি অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে বলতে চাই, এই সার্চ কমিটির মাধ্যমে বিগত যে দুটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছিল, তা নির্বাচন ব্যবস্থা এবং নির্বাচন কমিশনকে নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

জনগণের সমর্থন ছাড়াই এই আইন করা হচ্ছে, এমন বক্তব্যেরও কড়া উত্তর দিতে দেখা গেছে আইনমন্ত্রীকে। তিনি বলেন, আজ তাদের (বিএনপি) কথা হচ্ছে, যাই করা হোক না কেন তালগাছ তাদের। কিন্তু তালগাছ তাদের না, তালগাছ জনগণের। সে কারণে এখানে তারা যা বলছেন, তা বুঝে বলছেন না।

বিএনপির সংসদ বলেন, ইতোপূর্বে দুটি সার্চ কমিটির মাধ্যমে যে দুটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছিল, তার বৈধতা দেওয়ার জন্যই এই আইনটিকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। এখানে নতুনত্ব কিছুই নেই। অতীতের গঠিত দুটি নির্বাচন কমিটিরই দুটি অনুরূপ বিল আজ উত্থাপন করা হয়েছে।

প্রশ্নবিদ্ধ আইন সমাধান দেবে না বিএনপির এমন অভিযোগের পাল্টা যুক্তি দেন আইনমন্ত্রী। বলেন, তারা (বিএনপি) চান, তাদের পকেটে যে নাম আছে, সেগুলো দিয়ে দিতে হবে। কিন্তু এখানে তা হবে না। এটা বাংলাদেশ। এখানে জনগণই ঠিক করবে।

হারুন অর রশিদ আরও বলেন, এই সংকটের কোনো নিরসন হবে না। এ সমস্যা থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারবো না। সুতরাং আমি দাবি করব, এই আইনটি প্রত্যাহার করতে হবে।

বর্তমান কমিশনের বিচারের আগে ভুয়া ভোটার তালিকার জন্য বিএনপির বিচার হওয়া উচিত বলেও সমস্বরে মন্তব্য করেন সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতারা। দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ যাবতীয় নির্বাচনী স্বচ্ছতা আওয়ামী লীগের সময়েই হয়েছে বলেও জানান আইনমন্ত্রী।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন