ই-পেপার

শেবাচিম ‍এলাকায় পরোটা, সিঙ্গারা, ছমুচাসহ সবকিছুর দাম দ্বিগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: May 27, 2022

শুধু নিত্যপণ্যের মূল্যই নয়, এবার মূল্য বেড়েছে হোটেলের খাবারের। বিশেষ করে পরোটা, সিঙারা, ছামুচা, রোল এবং পুলির মূল্য বেড়েছে দ্বিগুন হারে। তবে শহরের সব স্থানে নয়, বরং বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় মূল্য বাড়িয়ে এসব খাবার বিক্রি করতে দেখা গেছে। অভিযোগ উঠেছে ভোক্তা অধিকার বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টির অভাবে হাসপাতাল এলাকার ব্যবসায়ীরা জিম্মি করছে মানুষদের। এ বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি চেয়েছেন হাসপাতালের রোগীর স্বজন এবং স্থানীয় বাসিন্দারা।

জানা গেছে, ইতিপূর্বে নগরীর সবখানেই সিঙারা, ছামুচা এবং পরোটা বিক্রি হয়েছে প্রতি পিচ পাঁচ টাকা করে। এছাড়া ভেজিটেবল রোল এবং চিকেন পুলি বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১০ টাকা করে। কিন্তু পণ্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির অজুহাতে কোন কোন এলাকায় এসব মুখরোচর খাবারের মূল্য দ্বিগুন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বরিশাল মেল-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ‘সুরমা’ নামের একটি হোটেলে গিয়ে দেখা যায় প্রতি পিস সিঙারা ১০ টাকা, ছামুচা ১০ টাকা, রোল ১৫ টাকা, পরোটা প্রতি পিস ১০ টাকা এবং চিকেন পুলি ১৫ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব খাবারের কোনটারই মান বৃদ্ধি পায়নি। এমনটি আকারও সেই আগের মতই রয়েছে। চিকেন পুলিশ বাড়তি দামে বিক্রি করা হলেও তাতে নেই মুরগির মাংসের ছিটেফোটাও।

ক্রেতা সেজে মূল্যবৃদ্ধি করে বিক্রির কারণ জানতে চাইলে দোকানের ক্যাশে থাকা বিপ্লব নামের যুবক বলেন, ‘সবকিছুর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। দাম বাড়িয়ে বিক্রি না করে উপায় নেই। তাছাড়া সবখানে একই দামে বিক্রি করছে। মনে চাইলে নিন, না চাইলে চলে যান’।

এদিকে, ‘একই এলাকায় হাসপাতালের পূর্ব গেটে কথা হয় যমযম হোটেল মালিক সাহাবুদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, ‘ময়নার কেজি ৬৫ টাকা। তেলের দাম বেড়েছে, গ্যাসের দাম বেড়েছি। তাই খাবারের মূল্যও বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাছাড়া খাবারের সাইজ বড় করেছেন বলে দাবি করলেও তার বাস্তব প্রমাণ মেলেনি।

খাবার মূল্য দ্বিগুণ করে মানুষকে ঠকাবার কারণ কি এমন প্রশ্নের উত্তরে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমি ইতিপূর্বে ৫টায় সিঙ্গারা, ছমুচা এবং পরোটা বিক্রি করেছি। এজন্য হাসপাতাল এলাকায় অন্য হোটেল ব্যবসায়ীদের রোশানলে পড়তে হয়েছে। তারা এসে আমাকে হুমকি দিয়ে গেছে। বাড়তি দামে না বিক্রি করলে তারা ব্যবসা বন্ধ করতে বলেছে। তাই বাধ্য হয়ে আমিও বাড়তি দামেই বিক্রি করছি।

এই ব্যবসায়ী দাবি করে বলেন, হাসপাতালের সামনে ত্রিশগোডাউন সড়কের মুখে হোটেল হাওলাদারের মালিক সিন্ডিকেট করে গোটা হাসপাতাল এলাকায় সিঙ্গারা, ছামুচা, পরোটা, রোলসহ অন্যান্য খাবারের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। কম দামে এসব বিক্রি করলে তারা এসে ধমকাচ্ছে।

এদিকে, হাসপাতালের মাঝের গেটে হোটেল নন্দীতে দেখা যায়, খাবারের মূল্য বেশি রাখা নিয়ে ক্রেতাদের সাথে বাকবিতন্ড হচ্ছে। ক্রেতাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করছেন দোকানি। এ কারণে ওই হোটেল থেকে কিছু না কিনেই চলে যান শফিক নামের ক্রেতা।

স্থানীয়দের অভিযোগ শুধু সিঙ্গারা, পরোটা আর ছামুচাই নয়, হাসপাতাল এলাকায় সব ধরনের পণ্যের মূল্যই অন্যসব এলাকার থেকে বেশি। এখানকার ব্যবসায়ীরা যে যার মত করে মানুষদের জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তাই এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট এবং ভোক্তা অধিকারের অভিযান জরুরি বলেও দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন