ই-পেপার

যমজ দুই কন্যার পাশে‍ই মায়ের লাশ দাফন

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: December 30, 2021

বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের আগাপাড়া চৌরাস্তা গ্রামের যমজ দুই নাতি লামিয়া সামিয়ার কবরের পাশে তার মা শিমু আক্তারের লাশ দাফন করা হয়। লঞ্চ দ‍ুর্ঘটনায় অগ্নিকাণ্ডে যমজ দুই বোন লামিয়া সামিয়া নিহতের ৬ দিন পর মঙ্গলবার সুগন্ধা নদী থেকে তাদেরর মা শিমু আক্তারের লাশ উদ্ধার করে বুধবার সকালে বাবা আজিজ হাওলাদারের বাড়িতে দাফন করা হয়।

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের আগাপাড়া চৌরাস্তা গ্রামের আজিজ হাওলাদারের দুই যজম নাতি লামিয়া ও সামিয় (৫) আগুনে পুরে মারা যাওয়ার পর তাদের লাশ দাফন করা হয় নানা আজিজ হাওলাদারের বাড়িতে। এসময় নিখোঁজ ছিল তাদের মা শিমু আক্তার (২৫)।

আগুনে পুরে গুরুতর আহত হয় শিমুর মা দুলু বেগম। লঞ্চ দুর্ঘটনার নিখোঁজের ৬ দিন পর বুধবার সুগন্ধা নদীতে শিমুর লাশ ভেসে উঠার পর তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন শিমুর ভাই হান্নান হাওলাদারের নিকট লাশটি হস্তান্তর করেন।

বৃহস্পতিবার সকালে বাবা আজিজ হাওলাদারের বাড়িতে যমজ দুই মেয়ে লামিয়া সামিয়ার কবরের পাশেই অর্ধগলিশ মা শিমুর লাশ দাফন করা হয়। লাশ দাফনে সময় বাবা আজিজ হওলাদার শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল। ওই বাড়িতে কোন শোকের মাতম নেই। কারণ লঞ্চ দুর্ঘটনায় আজিজ হওলাদারের দুই নাতি এবং মেয়ে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছেন এবং গুরুতর আহত হয়ে তার স্ত্রী দুলু বেগম বরিশাল শের-‍ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

আজিজ হাওলাদারে বার বার ডুকরে কেঁদে উঠে বলেন, ‘মোর দুইডা নাতীর লাশ দাফন অইছে কয়দিন আগে। আইজগো আইছেন মোর মাইয়ার লাশ। বউ হাসপাতালে পুইর‌্যা ভর্তি আছে। এহন মুই কুম্মে যামু কি হরমু। ও আল্লা মোরে বাঁচাও। আল্লায় কি বিচার করলো মোর সব শ্যাষ কইর‌্যা দেছে।’

সিমুর ভাই হান্নান বলেন, ‘হগল দিন বুইনের লাশের খোঁজখবর নিতে ঝালকাঠি সেই ঘটনাস্থলে যাই। গতকাল জানতে পারি দুইটি মহিলার লাশ উদ্ধার করা হইছে। খবর পাইয়া যাইয়া দেহি মোর বুইনের লাশটা মাডিতে পইর‌্যা অছে। তয় শরীরের অনেক জায়গা গইল্যা গ্যাছে। হের পরও চিনতে পারি। ডিসি স্যারের কাছে মোর বুইনের সব কিছু জানাইলে হেরা আমারে লাশ দিয়া দেয়।’

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওসার হোসেন বলেন, ‘নিহতদের পরিবারকে দাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। আর যেহেতু আব্দুল আজিজ হতদরিদ্র তাই তাকে একটি সরকারি ঘরের ব্যবস্থা করা হবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন