ই-পেপার

নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরছে শত শত মাছধরা ট্রলার

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: May 9, 2022

ঘূর্নিঝড় অশনির প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় উপকূলের দিকে ফিরে আসতে শুরু করেছে শত শত মাছ ধরা ট্রলার। অশনির প্রভাবে রোববার (৮ মে) রাত থেকেই পাথরঘাটায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। সকাল থেকেই কয়েকশত ট্রলার বিষখালী, বলেশ্বর, সুন্দরবনের খালগুলোর বিভিন্ন স্থানে ও উপকূলের খালগুলোতে নিরাপদ আশ্রয় নিতে শুরু করেছে।

সোমবার (৯ মে) সকাল থেকে দিন যতই গড়াচ্ছে আবহাওয়া আরও খরাপের দিকে যাচ্ছে। বিকেলে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত বিরামহীন ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে এখনো কোনো ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়নি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জেলে, কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষ।

মঠেরখাল থেকে সোহাগ হাওলাদার জানান, একটানা ভাড়ি বৃষ্টির কারণে তলিয়ে গেছে চরদুয়ানী ইউনিয়নের ৭নং মঠেরখালসহ গোট উপজেলার মুগডালের ক্ষেত এতেকরে খতির সম্মুখীন হবে উপজেলার কৃষকরা। আগামী বৃহস্পতিবার (১২মে) সুপার সাইক্লোন হয়ে উপকূলে আঘাত হানার কথা রয়েছে ঘূর্ণিঝড় অশনির। বরগুনাজেলা সহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে দুই নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধূরী বলেন, গভীর সমুদ্র উত্তাল থাকায় গতকালই (রোববার) বেশ কিছু ট্রলার নিরাপদে আসতে পেরেছে। এখন পর্যন্ত কয়েকশ ট্রলার সুন্দরবনসহ বিভিন্ন জায়গায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে। তবে এখনো কিছু ট্রলার সাগরে রয়েছে সেগুলো ফিরে আসতে রওনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে, জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, ইলিশ প্রজননের ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে ২০ মে। চলবে ২৩ জুলাই পর্যন্ত। শেষের দিকে কয়েকটি ট্রিপের জন্য জেলেরা সমুদ্রে ইলিশ শিকারে গেছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগর উত্তাল হওয়ায় প্রচন্ড ঢেউয়ের তোড়ে টিকতে না পেরে নিরাপদ আশ্রয়ে তীরে ফিরে এসেছে জেলেরা।

ঘুর্নিঝড় ‘অশনি’ক্ষতির আশংকায় নাজিরপুরের কৃষকরা ঘুর্ণিঝড় ‘অশনি’র আঘাতে ক্ষতির আশংকায় নাজিরপুরের কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। উপজেলায় চলতি বছরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও ধান ঘরে তুলতে পারেন নি অধিকাংশ কৃষক। কারো ধান মাঠে, আবার কারো ধান বাড়ির আঙ্গিনায়।

জানা গেছে, ঘুর্নিঝড় ‘অশনি’র প্রভাবে সোমবার সকাল থেকে উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরের নাজিরপুরে সকালে থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দিন ব্যাপী বৃষ্টির কারনে কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। একদিকে ধান কাটার শ্রমিকদের অভাব অন্যদিকে কাটা ধান মারাই করার অভাবে তা ঘরে তুলতে পারছেন না। আর অধিকাংশ জমিতে পাকা ধান থাকায় ঘুর্নিঝড়ে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার অশংকায় হতাশ কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়। উপজেলার শেখমাঠিয়া ইউনয়িনের বুইচাকঠী গ্রামের কৃষক দেবলাল মন্ডল জানান, তিনি চলতি মৌসুমে আড়াই একর জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন। এর কিছু অংশ পেকে গেলেও শ্রমিকের অভাবে তা কেটে ঘরে তোলা সম্ভব হয় নি। তাই ঘুর্নিঝড়ে বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের কবিরাজ বাড়ি এলাকার স্কুল শিক্ষক আজাহার আলী জানান, জমির ধান পেকে গেছে। কিন্তু ঘুর্নিঝড়ে ক্ষতির আশংকায় শ্রমিক না পাওয়ায় তা নিজেকেই কেটে ঘরে তুলতে হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দ্বিগ বিজয় হাজরা জানান, উপজেলার প্রায় ৫০ ভাগ জমির বোরো ধান কাটা হয়েছে। অধিকাংশ জমির ধান পেকে গেছে। ‘অশনি’র আঘাতের খবর পেয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনয়িনের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের ধান কাটতে পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন