ই-পেপার

কলাপাড়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও নার্স সঙ্কট

এএম মিজানুর রহমান বুলেট,কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: | আপডেট: December 17, 2021

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দীর্ঘ দিন ধরে প্রয়োজনীয় ডাক্তার,নার্স না থাকায় চিকিৎসাসেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে।

১২ টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত কলাপাড়া উপজেলার তিন লক্ষাধিক মানুষ কলাপাড়া ৫০ শয্যা হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। হাসপাতালের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যানুযায়ী হাসপাতালটি ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রæয়ারি ৩১ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু ৫০শয্যার ক্যাটাগরি অনুযায়ী এখানে চিকিৎসকসহ অন্যান্য সুবিধা নেই। বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। ডাক্তাররা তদবির করে জেলা সদর হাসপাতাল ডেপুটেশনে চাকরি করছেন। চিকিৎসকরা প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বদলি হয়ে যাওয়ায় লাগাতার চিকিৎসক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, জুনিয়র কনসালটেন্ট(সার্জারী) , জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইন এন্ড অবস), জুনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থোঃ), জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এ্যানেসথেসিয়া), জুনিয়র কনসালটেন্ট (চর্মওযৌন) , মেডিকেল অফিসার(ইনডোর), মেডিকেল অফিসার (হোমিও) ডেন্টাল সার্জন, ৮টি ইউনিয়নে এমও/সহ:সার্জন ৩জন, উপ সহাকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ১জন, ৮টি ইউনিয়নে উপ-সহ:কমি: মেডি: অফিসার ১জন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট(ল্যাব:) ২জন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট(ফিজিওথেরাপি) ১জন, পরিসংখ্যানবিধ ১জন, স্টোরকিপার ১জন, অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার অপারেটর/ডাটা এন্ট্রি অপা: ২জন, যক্ষèা ও কুণ্ট নিয়ন্ত্রন সহকারি ১জন, জুনিয়র মেকানিক ১জন, টিকেট র্ক্লাক(আউট সোর্সিং) ১জন ও টি বয়/ ওটি এ্যাটেনডেন্ট ১জন, এমএলএসএস-২,আয়া-১, নিঃপ্রহরি-১, কুক-২, পরিচ্ছন্নতা কমী র্৩, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ২, স্বাস্থ্য সহকারী ১৫, সিএইচসিপি ৩ জনসহ দীর্ঘ দিন ধরে পদ গুলো শুন্য রয়েছে।

হাসপাতালে পরিসংখ্যান অনুযাযী ,বর্হিবিভাগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০ জন এবং আন্তঃবিভাগে প্রায় ৮০ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়ে থাকেন। কিন্তু চিকিৎসক ও নার্সের বেশির ভাগ পদ শুন্য থাকায় বিপুল সংখ্যক রোগীকে চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে উপস্থিত চিকিৎসক ও নার্সদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। মান সম্মত অপারেশন থিয়েটার (ওটি) থাকলেও লোক বলের অভাবে সেগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ভবনটির দ্বিতীয় তলায় রয়েছে জরুরি প্রসূতিসেবার (ইওসি) আধুনিক অস্ত্রোপচার কক্ষ। সেখানে অটোক্লেভ মেশিন ও ওটি টেবিলসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামও রয়েছে। এই সরঞ্জামগুলো কয়েক বছর বেশি সময় ধরে পড়ে রয়েছে।

গাইনি বিশেষজ্ঞ না থাকায় জরুরি প্রসূতি সেবা চালু করা যাচ্ছে না। ফলে এখানে নানা স্বাস্থ্য জটিলতার কারণে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কোনো প্রসুতি মা সন্তান জন্ম দিতে পারছেন না। আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি দীর্ঘ দিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। রোগীদের বাহিরের প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে আলট্রাসনোগ্রামকরতে হয়। রাতে যখন বিদ্যুৎ থাকেনা তখন অন্ধকারে হাসপাতালের রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকলে ও গরমের দিনে চালানো হয় না জেনারেটর।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কয়েকজন রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেড সমস্যা কারনে অনেকে ফ্লারে চাদর বিছিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়। বেডের চেয়ে রোগী অনেক বেশি। এখানে ঔষধ তেমন দেয়া হয় না। বাহির থেকে ঔষধ কিনতে হয়। ভাল তেমন সেবা পাওয়া যায়না। আলট্রাসনোগ্রাম, এক্সরে, রক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাইরে থেকে করতে হয়। ফলে খরচ বেড়ে যায় যা অনেক গরিব রোগীর জন্য কষ্টকর।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিন্মময় হাওলাদার বলেন, চিকিৎসক সঙ্কট কথা উধর্বতন কর্তৃপক্ষ বার বার জানানো হয়েছে। কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। ৪থ শ্রেনি কর্মচারী ১৫টি পদ শুন্য রয়েছে ফলে হাসপাতাল পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা যাচ্ছে না।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন