ই-পেপার

ইভিএম ভালো-খারাপ নিয়ে কিছু বলব না: সিইসি

বিএসএল নিউজ ডেস্ক | আপডেট: May 25, 2022

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দেখার পর এটিকে চমৎকার যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘মেশিনের ভালো-খারাপ নিয়ে কিছু বলব না, এ ব্যাপারে মন্তব্য ও সিদ্ধান্ত জানতে আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে।’

বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইভিএম বিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সিইসি এ কথা বলেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও ইভিএম প্রকল্প এই সভার আয়োজন করে।

সিইসি বলেন, ‘বিরোধী দল থেকে যে মতামত এসেছে তা আমরা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিইনি। আমরা কারও মতামতকেই উপেক্ষা করিনি। আমরা বেশকিছু মিটিং করেছি। আজও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বসেছি। প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে বসেছি।

‘এই মেশিনের (ইভিএম) ব্যাপারে প্রযুক্তিবিদদের বক্তব্যের পর এখনই কোনো কিছু বলতে চাচ্ছি না। শুধু বলতে চাচ্ছি, এই মেশিনের বিষয়ে আরও কয়েকটি মিটিং করব। পলিটিক্যাল পার্টিকে ডাকা হবে।’

একজন টেকনিক্যাল ব্যক্তি মেশিন নিয়ে মূল্যায়ন করতে পারেন উল্লেখ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা সেই পার্সপেকটিভ থেকে টেকনিক্যাল পার্সনদের ডেকেছি। পলিটিক্যাল পার্টিগুলোকেও আমরা অনুরোধ করব তাদের যে টেকনিক্যাল টিম আছে কিংবা যদি থাকে তাদের দিয়ে এটি যাচাই করার জন্য।’

সিইসি বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে প্রযুক্তিবিদরা বলেছেন যে ম্যানিপুলেশন করার সুযোগ নেই। আমার কিন্তু আস্থা রাখতে হবে ওইসব মানুষের ওপর, যারা এই জিনিসগুলো বোঝেন, যারা প্রোডাক্টগুলো তৈরি করেছেন। প্রযুক্তিবিদরা আশ্বস্ত হয়েছেন। আমরা আরও কয়েকটি বড় মিটিং করব।

‘পলিটিক্যাল পার্টিগুলো রাজনীতির মাঠে বলছে যে এটা মন্দ মেশিন, ভালো মেশিন না। আমরা লিখিতভাবে জানতে চাইব তারা কী কী সমস্যা পাচ্ছে। তাদেরকে বিষয়গুলো লিখিতভাবে জানাতে বলব। আমরা যেন সিস্টেমেটিক্যালি অ্যাড্রেস করার সুযোগ পাই।

‘আমাদের হয়তো লিমিটেশন আছে। কিন্তু চেষ্টার কোনো ত্রুটি থাকবে না। আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করব, যেন সবার আস্থা অর্জন করতে পারি। ইভিএম ভালো না খারাপ তা নিয়ে এখনই কিছু বলব না। আপনাদের আর একটু অপেক্ষা করতে হবে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ইভিএম নিয়ে আমরা কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাইনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমারা ইভিএমে ৩০০ আসনে ভোট করব, না ১০০ আসনে করব, নাকি মোটেই করব না; ইভিএম পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে যথাসময়ে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

ইভিএম প্রদর্শন শেষে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটা মেশিন খুলে দেখেছি। অত্যন্ত চমৎকার একটা মেশিন। আমার মনে হয় পৃথিবীর কম দেশেই এই মূল্যবান জিনিসটা আছে। অত্যন্ত সহজভাবে এটা চালানো সম্ভব।

‘রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ করব, আপনারা এই নতুন মেশিনটা ব্যবহার করুন। তাতে আপনাদেরই লাভ হবে। অন্য যেকোনো মেশিন থেকে এটা আধুনিক। এটি এমনভাবে করা যে ম্যানিপুলেট করার সুযোগ নেই।’

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এম কায়কোবাদ বলেন, ‘কোনো মেশিনকে শতভাগ বিশ্বাস করা যাবে না। তবে এখানে ইভিএমের প্রতিটি অংশ এমনভাবে কাস্টমাইজড করা হয়েছে যে একজন ইচ্ছে করলেই পরিবর্তন করতে পারবে না। আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা যথেষ্ট দক্ষ এবং তাদেরকে আমরা বিশ্বাস করতে পারি।

এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িতদের যে কনফিডেন্স ও প্রাউড কমিটমেন্ট সেটা আমি নিশ্চিত হয়েছি। এটা খুবই ভালো একটি মেশিন তৈরি করা হয়েছে। আশা করি এটা ডিসপ্লে করা হবে এবং যে কেউ টেস্ট করতে পারবে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানোর বিধান নির্বাচন কমিশনে রয়েছে এবং আশা করি তারা সেটা করবে।’

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান (অব.), বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, মো. আনিছুর রহমান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মতিন সাদ আবদুল্লাহ, ড. মো. মাহফুজুল ইসলাম, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) পরিচালক মেজর জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন, সেনা কল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন