ই-পেপার

ইউপি নির্বাচনে প্রার্থীর অতি আবেগে সহিংসতা: ইসি সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: November 11, 2021

ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে বিজয়ের জন্য প্রার্থীর অতি আবেগী হয়ে যাওয়ার কারণেই এসব নির্বাচনে সহিংসতা হয়ে বলে মনে করছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নির্বাচন ভবনে দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

ভোটকেন্দ্রের বাইরে সংঘর্ষ ঘটলে সেটি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের বাইরে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে যে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হয়েছে সেসব নির্বাচনের ডাটাগুলো আপনাদের (গণমাধ্যম) মাধ্যমেই আমরা নিয়েছি। সে তথ্যে আমরা দেখেছি মোট ৮৪ জন মানুষ মারা গেছেন। কিন্তু এবার আজ যে ছয়জন মানুষ মারা গেছেন সেটি নিঃসন্দেহে কমিশনের জন্য দুঃখজনক ব্যাপার।

এটি নির্বাচন কমিশনের কাছে জেলা প্রশাসক এবং রিটার্নিং কর্মকর্তারা যেভাবে ফোর্স চেয়েছেন আমরা সেটি ডেপ্লয় করেছি। আমরা মনে করি এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ম্যাজিস্ট্রেট, রিটার্নিং অফিসার এবং নির্বাচনী কর্মকর্তা সবাই অত্যন্ত একটিভ ছিলেন এবং তারা চেষ্টা করেছেন ভালো কাজ করার জন্য সে কারণে ভোটটি সুষ্ঠু হয়েছে।

ইসি সচিব বলেন, একটি কথা মনে রাখতে হবে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কিন্তু ঘরে ঘরে প্রতিযোগিতা হয়, পাড়ায় পাড়ায় প্রতিযোগিতা হয়। আপনারা দেখবেন একটি পাড়া আরেকটি পাড়ার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে চায়।

এই প্রভাব বিস্তার করার একটি প্রতিযোগিতা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে থাকে। প্রার্থী যারা তারা কিন্তু অতি আবেগী হয়ে যায় বিজয়ের জন্য। এসব কারণেই কিন্তু এই নির্বাচনে সহিংসতা হয়।

তারপরও বলবো, যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তার জন্য নির্বাচন কমিশন মনে করে এই ঘটনাগুলো না ঘটলে আরও ভালো হতো। আমরা মনে করি নেক্সট টাইম আরও ভালো ভোট হবে।

কত শতাংশ ভোট পড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কত শতাংশ ভোট পড়েছে সেটি এই মুহূর্তে বলা কঠিন, যেহেতু ভোট কাউন্ট হচ্ছে। আমরা এ পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছি তাতে ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে।

সামনের ধাপের নির্বাচনে হতাহত কমাতে নতুন কোনো চিন্তা করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ যে ভোট হয়েছে এটি বসে এনালাইসিস করবো। এনালাইসিস করে দেখবো আর কোন কোন জায়গায় বেশি আমাদের জোর দিতে হবে, যাতে ভোট আরও ভালো হয়।

হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, আজ যে ছয়জন মারা গেছেন কেউ ভোটকেন্দ্রে মারা যাননি। প্রার্থীদের মধ্যেই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, তাদের মধ্যেই সংঘর্ষের কারণে মারা গেছেন।

মোট যে ৮৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়েছে আমরা সব জেলায় খবর নিয়েছি, প্রার্থীরাও কেউ কেউ আমাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন, আমরা জানতে পেরেছি- ভোটটি খুব সুন্দর হয়েছে, উৎসবমুখর হয়েছে।

৮ হাজার ৪০০ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০টিতে ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছে। আমাদের প্রিসাইডিং অফিসাররা ওই ১০ কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দিয়েছেন। এগুলোতে পরে ভোটগ্রহণ করা হবে। অন্য কেন্দ্রগুলো নিয়ে যদি রেজাল্ট না হয় তখন ডিসিশন নিয়ে ভোট নেওয়া হবে।

গতকাল চতুর্থ ধাপের ভোটের তফসিল হয়েছে, পরবর্তী ধাপের ভোট নিয়ে আবার কমিশনের বৈঠক হবে বলেও জানান ইসি সচিব।

এর আগে আজ দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনী সহিংসতায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক।

নিহতদের মধ্যে নরসিংদীতে তিনজন, কক্সবাজারে একজন, চট্টগ্রামে একজন ও কুমিল্লায় একজন। সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন