ই-পেপার

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লুসি হল্টের পাশে জেলা প্রশাসক

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: November 20, 2021

শের-ই-বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া ব্রিটিশ নাগরিক সিস্টার লুসি হল্ট এর খোঁজ খবর নিয়েছেন জেলা প্রশাসক। শনিবার দুপুর ১ টায় তিনি হাসপাতালে সিস্টার লুসি হল্টের শয্যা পাশে দাঁড়িয়ে তার শারীরিক এবং চিকিৎসা সম্পর্কিত খোঁজ খবর নেন। এসময় তিনি চিকিৎসকের সাথে তাঁর চিকিৎসার বিষয়ে কথা বলেন জেলা প্রশাসক।

এর আগে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার লুসি হল্টের সুস্থতা কামনা করে ফল ও ফুল নিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং তাঁর সুচিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করেন।

এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, সিস্টার লুসি হল্টের চিকিৎসার ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসময় তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন- জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আল-মামুন তালুকদার, সহকারী কমিশনার সুব্রত বিশ্বাস দাস, প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ, সমাজসেবা অফিসার দিলরুবা রইচি, ডিবিসি নিউজ বরিশালের স্টাফ রিপোর্টার অপূর্ব অপু প্রমুখ।

প্রসংগত, বৃহস্পতিবার রাতে সিস্টার লুসি অক্সফোর্ড মিশনে তাঁর নিবাসে অসুস্থ হয়ে পড়লে মিশনের চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সিস্টার লুসি হল্টের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানান, তাঁর রক্তচাপ মাত্রাতিরিক্ত। এ কারণে তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল সীমিত হয়ে একটি ছোট স্ট্রোক হয়েছে।

পরে তাঁকে হাসপাতালের নারী মেডিসিন ওয়ার্ডের অধিনে পঞ্চম তলার একটি কেবিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া লুসি হল্টের বয়স আগামী ১৬ ডিসেম্বর ৯২ বছর পূরণ হবে। তাঁর পুরো নাম লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট। তিনি স্বদেশ, স্বজনদের ভুলে বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের মায়ায় এখানেই ৬০ বছর ধরে রয়েছেন। তাঁর অন্তিম ইচ্ছা, চিরকালের মতো মিশে যেতে চান বাংলার প্রকৃতিতে।

তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ গণভবনে ডেকে নিয়ে তাঁর হাতে তুলে দেন এ দেশের নাগরিকত্ব। তিনি বাংলা বলেন, বাঙালিদের মতো শাড়ি পরেন, বাঙালিদের সেবা করে যাচ্ছেন।

সিস্টার লুসির জন্ম ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে। বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট। দুই বোনের মধ্যে ছোট লুসি। তাঁর বড় বোন রুৎ অ্যান রেভা ফেলটন স্বামী ও তিন ছেলে নিয়ে ব্রিটেনেই বসবাস করেন। লুসি ১৯৪৮ সালে উচ্চমাধ্যমিক (দ্বাদশ) পাস করেন।

তিনি ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসেন। যোগ দেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে। এখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পড়াতেন। এরপর আর দেশে ফিরে যাননি। ৫৭ বছর ধরে বরিশাল ছাড়াও কাজ করেছেন যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন