ই-পেপার

শতভাগ বিদ্যুতায়ন ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থান: প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন

বিএসএল নিউজ ডেস্ক | আপডেট: May 17, 2022

সম্ভাবনাময় তথ্য প্রযুক্তি কর্মসংস্থান খাতের সম্প্রসারন আরও নিশ্চিত করবে বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নিশ্চিত বিদ্যুৎ সরবরাহ সকল উৎপাদন, অগ্রগতি, সর্বোপরি উন্নয়নের অন্যতম উপকরণ। চাহিদামত বিদ্যুৎ প্রাপ্তি এবং নিয়মিত সরবরাহ নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে উৎপাদন খাতে (বড়, মাঝারী, ছোট), সেবাখাতসহ সকল খাতভিত্তিক অগ্রগতি ও উন্নয়ন গতিশীল করা সম্ভব। বাংলাদেশে বর্তমানে শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতের উৎপাদন, সঞ্চালন এবং নতুন নতুন সংযুক্তির মধ্যদিয়ে চাহিদামত বিদ্যুৎ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হচ্ছে।

আর এটা সম্ভব হয়েছে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং দুরদর্শী নেতৃত্বের কারণে। বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী এবং সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বের কারণে বিদ্যুৎখাতের উৎপাদন সক্ষমতা এবং বৃদ্ধি-চাহিদা ও প্রাপ্তির দোড়গোড়ায় পৌছেছে। এখন প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং যথাযথ নীতিগ্রহণ ও বাস্তবায়ন। বিদ্যুৎ, জ¦ালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়

সূত্রমতে, ২০০৯ সালের পর হতে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা পাঁচ-গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২৭ টির স্থলে বর্তমানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র ১৪৮ টি। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট হতে বেড়ে দাড়িয়েছে ২৫ হাজার ৫১৪ মেগাওয়াট। এই সময় সঞ্চালন লাইন বেড়েছে ৫ হাজার ২১৩ কিলোমিটার। বিরতত লাইন বেড়েছে ৩ লক্ষ ৬১ হাজার কিলোমিটার। নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোজন দেয়া হয়েছে ৩ কোটি ১৩ লক্ষ গ্রাহককে। এই তথ্য আশাব্যঞ্জক এবং উৎসাহের উদ্দীপক ধরে নিয়ে প্রয়োজন এখন যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণের। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ব্যবহারে লক্ষদল ভিত্তিক পরিকল্পনা ও নীতিমালা প্রণয়ন করে তার যথাযথ বাস্তবায়ন অত্যাবশ্যক। এই প্রাসঙ্গিকতায় বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষিত বেকার যুবসমাজকে লক্ষদল ধরে কর্মসংস্থানের সম্প্রসারণে যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন গুরুত্ববহ।

বর্তমানে বাংলাদেশে শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, নিরক্ষর যুব সমাজের অধিক্য দৃশ্যমান। নিয়মিত পরিসংখ্যান না দিয়েও এটা বলা যায় দেশে শিক্ষিত বেকারত্ব একটা সামাজিক সমস্যা হিসাবে পরিগনিত। আর এই সামাজিক সমস্যা থেকে উত্তোরণের উপায় বের করা এখন আলোচনার বিষয়। এই প্রাসঙ্গিকতায় বেকার যুব সমাজের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র সম্প্রসারণে তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থান এর খাতকে বিশেষ ভাবে প্রাধান্য দেয়া যায়। কেননা তথ্য প্রযুক্তির কর্মসংস্থানের বিষয়টির সাথে নিশ্চিত বিদ্যুৎ প্রাপ্তির মধ্যদিয়ে তথ্য প্রযুক্তির কর্মসংস্থানের খাতকে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ করা সম্ভব। যেহেতু দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে সেহেতু সমগ্রদেশে তথ্য প্রযুক্তির কর্মসংস্থানের সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।

এই কিছুদিন আগেও এই বিষটি শুধুমাত্র বড় বড় শহরকেন্দ্রিক ছিল। কিন্তু বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়ে তথা অঞ্চলভেদে তথ্য প্রযুক্তির কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ সম্ভব শুধুমাত্র শতভাগ বিদ্যুতায়নের জন্য। স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তা তৈরী করার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে বাংলাদেশের অঞ্চলভেদে স্থানীয় যুবসমাজকে লক্ষদল নির্ধারণ করে স্থানীয় উদ্যোক্তাতৈরী অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এবং গুরুত্ববহ। কেননা স্থানীয় পর্যায়ে যুব সমাজকে যদি স্থানীয়ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে কর্মক্ষেত্রে সংযুক্ত করা যায় তাহলে দেশের অর্থনীতির গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে আর তা হবে উন্নয়ন অগ্রগতির সারথী।

সুতরাং দেশে যেহেতু শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে সেহেতু স্থানীয় পর্যায়ে বিদ্যুৎ-এর সর্বোত্তম ব্যবহার করে তথ্য প্রযুক্তির কর্মসংস্থানের দ্রুত সম্প্রসারণ করা অতীব প্রয়োজন। এই তথ্য প্রযুক্তির কর্মসংস্থান একদিকে যেমন বেকার যুব সমাজকে আকৃষ্ট করবে অন্যদিকে সমগ্র বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যবহার ব্যাপক ব্যবহার নিশ্চিত হবে। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, তথ্য প্রযুক্তির কর্মসংস্থানখাত প্রয়োগ উপযোগী করতে হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও প্রাপ্তি নিশ্চিত করা জরুরী। আর তাই এক্ষেত্রে দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন ও বিদ্যুৎ-এর উৎপাদন বৃদ্ধি আশার সঞ্চার করেছে। এই আশার আলোতে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রয়োজন এখন তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থানের সম্প্রসারণ।

শিক্ষিত বেকার যুবসমাজ আর বেকার জনগোষ্টির আধিক্য ধরে নিয়ে সমগ্র এই বেকার জনগোষ্টিকে কর্মসংস্থানের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব। প্রয়োজন শুধু খাতভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি। ক্ষুদ্র, মাঝারী এবং বড় আকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিদ্যুৎ অপরিহার্য। আর সেই বিদ্যুৎ এখন আমাদের নাগালের মধ্যে। সুতরাং যথাযথ পরিকল্পনা এবং কার্যক্রম গ্রহণ এখন অতীব জরুরী। কেননা সময় এবং শ্রম সম্পদকে কাজে লাগাতে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের খাত সৃষ্টি করতে হবে। আর এই কর্মসংস্থানে নিয়োজিত শ্রম শক্তিই দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে গতিশীল করবে।

সংযুক্ত হবে প্রচুর প্রাণশক্তি সম্পন্ন যুবসমাজের অপার শ্রমশক্তি- যা উন্নয়নের চাবিকাঠি। অতএব শতভাগ বিদ্যুতায়নের আর্শিবাদ এবং চাহিদামত বিদ্যুৎ প্রাপ্তি তথ্য প্রযুক্তি খাতের কর্মসংস্থানসহ নানামুখী উৎপাদন খাত, সেবাখাত, শিল্পখাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ তৈরী হবে। যার মাধ্যমে শুধু শিক্ষিত বেকার যুবসমাজই নয় দেেেশ সকল বেকার জনগোষ্টির কর্মসংস্থান হবে এবং দেশের উন্নয়ন কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন