ই-পেপার

বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বরিশালে শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: September 1, 2022

বরিশালে পৃথক আয়োজনে জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে কোন রকম বাধা বিপত্তি ছাড়াই নগরীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে মহানগর বিএনপি। তবে বিকালে জেলা বিএনপি আয়োজিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় পুলিশি বাধার অভিযোগ উঠেছে।

এর আগে দলটির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর সদর রোডে অশ্বিনী কুমার টাউন হল সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ের সামনের সামনে থেকে আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করে মহানগর বিএনপি। শোভাযাত্রাকে ঘিরে সকাল ৯টার পর থেকেই নগরীর ৩০টি ওয়ার্ড বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হয়। এতে সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যেই টাউন হল চত্বরসহ সদর রোড এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এসময় সেখানে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুকের সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভোটের অধিকার, বাক স্বাধীনতা অর্জনের অধিকার আদায়ের লড়াই-সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে এবার জনগণের দল বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। এখানে কেবল বিএনপির নেতা-কর্মী-সমর্থক নন, বরং মুক্তিকামী মানুষেরাও এই শোভাযাত্রায় অংশ নিচ্ছেন। ফলে আজকের এই শোভাযাত্রা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই-সংগ্রামে গণমানুষের অংশগ্রহণের প্রতিফলন হয়েছে। অচিরেই এই সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে জনগণের অধিকার জনগণের মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা পরবর্তী সকাল ১১টায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রার অগ্রভাগে ছিলেন বিএনপি’র দলীয় পতাকা। এছাড়া রংয়ের শাড়ি পড়া মহিলাদল এবং ছাত্রদলের নেতৃদের ডিসপ্লে লক্ষ্যনিয়ম ছিল। এছাড়া মিছিলে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ব্যানার, ফ্যাস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশগ্রহণ করেন দলের নেতাকর্মীরা। দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বের হওয়া শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জেলা ও মহানগর বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

শোভাযাত্রায় অংশ নেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির বরিশাল বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নু, মহানগর মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক, সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আলী হায়দার বাবুল, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি অধ্যাপক ফারহানা তিথি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মঞ্জু, মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক ফয়েজ আহমেদ খান, মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাজাহারুল ইসলাম জাহানসহ মহানগর বিএনপি’র ৩০টি ওয়ার্ড এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সময়ে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিতে বাধা, হামলা এবং মারধরের ঘটনা ঘটেছে। গত ২৭ আগস্ট বরিশালের বাকেরগঞ্জের গারুরিয়া ইউনিয়নের হেলেঞ্চা গ্রামে বিএনপির প্রস্তুতি সভায় হামলার অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।

এতে বিএনপির ৮-১০ জন নেতা-কর্মী আহত হন। ২৫ আগস্ট মেহেন্দীগঞ্জে পৌর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিলে শ্রমিক লীগ তা করতে দেয়নি। ২৩ আগস্ট হিজলায় বিএনপির সমাবেশ চলাকালে একই স্থানে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করে। মুলাদী উপজেলায় একই স্থানে আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দেওয়ায় স্থান পরিবর্তন করে কর্মসূচি পালন করতে হয় বিএনপিকে।

যদিও বরিশাল নগরীতে সহবস্থানের রাজনীতির নজির সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠন ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসলেও ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাধা প্রদানের কোন ঘটনা ঘটেনি। এমনকি সম্প্রতি সময়ে পুলিশের পক্ষ থেকেও বাধার প্রদানের ঘটনা ঘটেনি। তার ওপর বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও বাধাহিনভাবে কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি।

যদিও বিকালে বরিশাল জেলা বিএনপি’র কর্মসূচি পুলিশি বাধার অভিযোগ করেছেন নেতারা। তারা বলেন, ‘বিকালে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রার শেষ দিকে পুলিশ বাধা দেয়। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কা ধাক্কির ঘটনাও ঘটে। এর ফলে পুলিশের বাধার মুখে শোভাযাত্রাটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করতে পারেননি।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন