ই-পেপার

পিরোজপুরে ওসির বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নিয়ে ঠিকাদারকে একাধিক চুরির মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ!

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: May 28, 2022

ঘটনার তদন্ত ছাড়াই প্রতিপক্ষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদারের বিরুদ্ধে একের পর এক চুরির মামলা গ্রহনের অভিযোগ উঠেছে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ.জ.মো. মাসুদুজ্জামান মিলুর বিরুদ্ধে। ওই ঠিকাদারের কাছ থেকে দাবীকৃত মাসোহারা না পেয়ে এমন ঘটনা ঘটাচ্ছেন।

শনিবার (২৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন হয়রানির শিকার ঠিকাদার ফেরদৌস ওয়াহিদ রাসেল। পিরোজপুর সদর উপজেলার পশ্চিম শিকারপুর মেসার্স সরদার ইলেকট্রনিকের স্বত্ত্বাধিকারী তিনি।

লিখিত বক্তব্যে ফেরদৌস ওয়াহিদ রাসেল বলেন, তার চাচা এনায়েত হোসেন সরদারের সাথে পারিবারিকভাবে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। এনায়েত হোসেন সরদার তাকে ঘায়েল করতে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি বাসার কেয়ারটেকার দিয়ে থানায় ১৮ হাজার ৫০০ টাকা চুরির অভিযোগ দায়ের করান। ওসি সেই অভিযোগের কোন ধরণের প্রাথমিক তদন্ত না করে সরাসরি এজাহার হিসেবে গ্রহন করেন (মামলা নং ০২/৩২)। এছাড়া সেই একই বাদীর দ্বারা ১১ মে ফেরদৌস ওয়াহিদ রাসেলের নিজের জমিতে উত্তোলিত ঘর থেকে মিটার চুরির অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগও তদন্ত ছাড়া মামলা হিসেবে গ্রহন করে রাসেলকে গ্রেফতার করেন ওসি মাসুদুজ্জামান মিলু। (মামলা নং ০৮/১১৬)। একই সাথে গ্রেফতারের ছবি তুলে স্বপ্রনোদিত হয়ে ওসি বিভিন্নজনকে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করান।

ফেরদৌস ওয়াহিদ রাসেল বলেন, আমি পিরোজপুরের প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। আমার মা, ভাই ও বোন ইউরোপে বসবাস করেন। অথচ আমার বিরুদ্ধে একই বাদী দিয়ে অভিযোগ আনা হয়েছে আমি সামান্য সাড়ে ১৮ হাজার টাকা চুরি করেছি। শুধু সেখানেই শেষ নয় আমার নিজের ঘরের মিটার চুরি আমি নিজে করেছি এমন মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারাভোগও করতে হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ওসি আ.জ. মো. মাসুদুজ্জামান মিলু পিরোজপুর সদর থানায় যোগ দেওয়ার পরে বিভিন্ন জনের মাধ্যমে আমাকে খবর পাঠাতেন এবং ডেকে মাসোহারা দাবী করতেন। আমি দিতে অস্বীকার করায় তিনি বলেছিলেন, আমাকে এমন ক্ষতি করবেন যেন কারো কাছে মুখ দেখাতে না পারি। আমি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হলেও আমার বিরুদ্ধে একের পর এক চুরির মামলা তদন্ত ছাড়া গ্রহন করে তার মনে জমে থাকা ক্ষোভের প্রতিশোধ নিচ্ছেন।

ওয়াহিদ রাসেল দাবী করেন, তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। পক্ষান্তরে ওসি মাসুদুজ্জামান মিলুর পরিবার বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয়। ওসির আপন ছোট ভাই বরগুনা জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদুজ্জামান টিপন। তিনি ওসি হলেও আওয়ামী লীগের নেতাদের সহ্য করতে পারেন না। কোন আওয়ামী লীগের নেতার কাছে বা ব্যবসায়ীর কাছে মাসোহারা চাইলে এভাবে সামাজিক, অর্থনৈতিক নির্যাতন চালান। তিনি এর আগে বাউফল, বাকেরগঞ্জ ও নলছিটি থানা থেকে অপকর্মের দায়ে ক্লোজড হন।

রাসেল বলেন, দাবী অনুসারে মাসোহারা না দেওয়ায় ওসি মাসুদুজ্জামান মিলু আমার পারিবারিক বিরোধকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে আমাদের পরিবারকে উৎখাতের চক্রান্ত করছেন। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজির হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। একই সাথে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী জানান।

যদিও অভিযোগের বিষয়ে ওসি আ. জ. মো মাসুদুজ্জামান মিলু দাবী করেন, জমি বিরোধের জের ধরে তার চাচার সাথে বিরোধ আছে। চাচা মামলা দায়ের করলে আমার কিছুই করার নেই। একই ব্যাক্তির বিষয়ে একই বাদী একই অভিযোগে একাধিক মামলা দিতে পারেন কিনা প্রশ্নের জবাবে বলেন, ঘটনাস্থল আলাদা হলে আমি নিতে বাধ্য। ওসি বলেন, আমার ভাই বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন