ই-পেপার

নিখোঁজ মা-বোনকে খুঁজছে রনি

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: December 28, 2021

এখনো নিখোঁজদের খুঁজছে স্বজনরা, জীবিত অথবা মৃত। পরিবারের দুই সদস্যের মরদেহ খুঁজছে রনি নামে স্বজনহারা এক লঞ্চযাত্রী। ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে বরগুনা সদর হাসপাতালে মা রুনা বেগম (৩৫) ও ছোট বোন রুশনি আক্তার লিমার (১২) মরদেহ খুঁজে পেতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে নমুনা দিতে এসেছেন বরগুনার বেতাগীর করুনা গ্রামের জিসান শিকদার রনি।

তিনি বলেন, বেতাগীতে নানু অসুস্থ। এই খবর পেয়ে মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ২৩ ডিসেম্বর এমভি অভিমান-১০ লঞ্চে করে সদরঘাট থেকে রওনা করি বিকেলে। দ্বিতীয় তলায় বিছানা বিছিয়ে রাতের খাবার খেয়ে তিনজনই ঘুমিয়ে পড়ি। রাত যখন আনুমানিক ৩টা সবাই তখন ঘুমিয়ে ছিল, আমিও সবার সঙ্গে ঘুমাচ্ছি।

হঠাৎ করে লঞ্চে আগুন লাগে। ঘুম ভেঙে গেলে তাড়াহুড়া করে মাকে নিয়ে আমি ছাদে চলে যাই। আমার বোন তখন ঘুমাচ্ছিল। আমরা যখন লঞ্চের ছাদের ওপর দিয়ে নিচে নামার চেষ্টা করছি। মা ও আমি একসঙ্গে নামার চেষ্টা করেও পারছিলাম না। আমি লঞ্চের সামনের অংশে গিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রায় এক ঘণ্টার মতো সাঁতার কেটে কোনমতে নিজের জীবন রক্ষা করতে পারছি।

নদীর কিনারায় এসে আতঙ্কে কিছুক্ষণের জন্য স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলি যেন সব কিছুই ভুলে গেছি আমি। আমার সঙ্গে কেউ ছিল কিনা তখন আমি জানতাম না। যখন আমার স্বাভাবিক জ্ঞান ফিরে পেলাম তখন দেখি আমার পাশে মা ও বোন নেই। খুব খারাপ লাগছিল তখন।

আমার সঙ্গে থাকা ছোট বোন ও মা তাদের এখনো কোনো সন্ধান পাইনি। যেমন করে হোক আপনারা আমার মা ও বোনকে খুঁজে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। জীবিত পাওয়া যায়নি তাদের, যদি মরদেহ পাইতাম তাহলে নিজেকে একটু সান্ত্বনা দিতে পারতাম।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন