ই-পেপার

টয়লেটের পাইপে শিশুটির বেঁচে থাকা অলৌকিক !

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: May 16, 2022

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের টয়লেটে বাচ্চা প্রসবের পর সেই বাচ্চা টয়লেটে আটকে পরার পর উদ্ধারের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পরিচালকের দপ্তরে। সোমবার দুপুরে হাসপাতাল পরিচালক ডা: এইচ এম সাইফুল ইসলামের কাছে এক পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।

তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা: মনিরুজ্জামান শাহিন বলেন, টয়লেটের প্যানের সাথে পাইপ সরাসরি যুক্ত ছিলো। কোনো বাঁকা লাইন হয়ে পাইপের সাথে যুক্ত হলে বাচ্চাটি পরে যাওয়ার পর প্রানহানির শংকা থাকতো। কিন্তু পাইপটি সরাসরি টয়লেটের প্যানের সাথে যুক্ত হওয়ায় সরাসরি পাইপের মধ্যে পরে গেছে বাচ্চাটি।

তাছাড়া বাচ্চাটির ওজন ছিলো এক কেজি ৩শ গ্রাম এবং আকারেও ছিলো স্বাভাবিকের তুলনায় ছোট। যে কারণে সহজেই টয়লেটের পাইপের মধ্যে পরে গেছে। বাচ্চার মায়ের প্রসব যন্ত্রণার মধ্যে মল ত্যাগের বেগ পেলে সে টয়লেটে যায়। মলত্যাগের জন্য টয়লেটে গেলেও সে মলত্যাগ করেনি, বরং বাচ্চা প্রসব করেছে। প্রথমে বিষয়টি সে টের পায়নি। আর তাছাড়া বাচ্চার নাড়িটি স্বাভাবিক ভাবেই ছিড়ে গেছে এমনটাই উঠে এসেছে তদন্তে।

তদন্ত কমিটির সভাপতি বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডা: মুজিবুর রহমান তালুকদার বলেন, তদন্তে উঠে এসেছে ৪৭ মিনিটের মত বাচ্চাটি টয়লেটের পাইপের মধ্যে আটকা ছিলো। মেডিকেল সায়েন্সে এরকম ঘটনার নজির নেই। বাচ্চাটি নাড়ি ছিরেই পড়ে গিয়েছিলো। কোনো রক্তক্ষরণও হয়নি বাচ্চাটির। বাচ্চাটি কিভাবে বেচে আছে সেটা অলৌকিক, মিরাকেল। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক্সপ্লেইন করার সুযোগ নেই।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, সোমবার দুপুরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। এক পৃষ্ঠার তদন্ত রিপোর্টে কারো গাফলতির বিষয় উঠে আসেনি। রোগী তার স্বজনকে সাথে নিয়ে নিজে থেকেই মল ত্যাগের জন্য টয়লেটে যায়, আর সেখানেই বাচ্চা প্রসব করেন তিনি। বাচ্চার নাড়ি ছিরে গিয়েছিলো, যে কারণে পাইপের মধ্যে কোনো বাধা ছাড়াই বাচ্চাটি ঢুকে গিয়েছিলো।

পাশাপাশি বাচ্চার সাইজের থেকে পাইপের সাইজ বড় হওয়ায় বাচ্চাটি সহজে ঢুকে গেছে পাইপের মধ্যে। পরিচালক বলেন, প্রসূতি ওয়ার্ড থেকে শিল্পী বেগমকে রিলিজ দেয়া হয়েছে। সে এখন শিশু বিভাগে তার শিশুর কাছে রয়েছেন। শীগগরিই রিলিজ দেয়া হবে তার শিশুকেও।

প্রসঙ্গত, ৭ মে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের টয়লেটে বাচ্চা প্রসব করে পিরোজপুরের নেছারাবাদ এলাকার জেলে নেয়ামত উল্লাহর স্ত্রী শিল্পী বেগম। বাচ্চাটি টয়লেটের পাইপে আটকে গেলে দীর্ঘ সময় পর শিশু বিভাগে থাকা টয়লেটের পাইপ ভেঙে উদ্ধার করা হয় বাচ্চাটিকে। এই ঘটনায় পরের দিনই তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন