বরিশাল প্রতিনিধি | আপডেট: December 10, 2021
পুলিশের প্রতিবদনে `স্থায়ী ঠিকানা ও ভূমিহীন’ আছপিয়া ইসলাম কাজল নিজের জন্মস্থান বরিশালের হিজলাতেই জমি ও ঘর পাচ্ছেন। যতদ্রুত সম্ভব তাকে জমি ও ঘর দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে প্রশাসন। তবে এরপরও আছপিয়া কনস্টেবল পদে নিয়োগ পাবেন কিনা সেই বিষয়ে নিশ্চিত নন কেউ। তবে আছপিয়ার চাকরি হয়েছে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
শুক্রবার দুপুরে হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বকুল চন্দ্র কবিরাজ বলেন, আছপিয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসক স্যার আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভূমিহীন এই পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়।
আমি সকালে আছপিয়াকে কার্যালয়ে ডেকে বিস্তারিত জেনেছি।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে চলমান আশ্রায়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় তার পরিবারকে ঘর ও জমি দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়া হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, বিকেলে তাকে নিয়ে খাস জমি দেখতে যাবো। জমি পছন্দ হলেই দ্রুত হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
বকুল চন্দ্র কবিরাজ বলেন, নিয়োগের সময়সীমা কতদিন তা আমি জানি না। তবে জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে সেই সময়সীমার মধ্যে তার বা তার মায়ের নামে জমি এবং ঘর হস্তান্তর করার চেষ্টা করবো।
এদিকে, আছপিয়ার পুলিশে চাকরি হয়েছে এমন তথ্য বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও বিষয়টি গুজব বলেছেন খোদ আছপিয়া।
আছপিয়া ইসলাম কাজল বলেন, ফেসবুকে বিভিন্ন স্থানে আমার চাকরি হয়েছে এমন পোস্ট দেখেছি। শুনেছি সাইবার ৭১ নামের একটি আইডি থেকে আমার চাকরি হয়েছে এমন পোস্ট দেওয়া হয়েছে তবে আমি এই বিষয়ে কিছু জানিনা। চাকরি হয়েছে কিনা সেই চিঠি বা খবর আমাকে জানানো হয়নি।
বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান বলেন, আছপিয়ার নিয়োগের বিষয়টি এখন সহজ নয়।
প্রসঙ্গত, পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে বরিশাল জেলায় ১০ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পুলিশ সদর দফতর। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বরিশাল জেলা থেকে টিআরসি পদে ৭ জন নারী ও ৪১ জন পুরুষ নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী হিজলা থেকে অনলাইনে আবেদন করেন আছপিয়া ইসলাম। ১৪, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত শারীরিক যোগ্যতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৭ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলেও কৃতকার্য হন। ২৪ নভেম্বর পুলিশ লাইন্সে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম হন আছপিয়া।
২৬ নভেম্বর পুলিশ লাইন্সে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২৯ নভেম্বর মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেখানে কৃতকার্য হন আছপিয়া। তবে চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশনে নিয়োগ থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। কারণ তিনি বরিশাল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা নন। এই নিয়োগ পাওয়ার অন্যতম শর্ত ছিল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) হিজলা থানার এসআই মো. আব্বাস ভেরিফিকেশনে আছপিয়া বরিশাল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা নয় উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেন।