নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: November 23, 2021
সার বহনকারী একটি ট্রলার তলা ফেটে সন্ধ্যা নদীতে ডুবে গেছে। এতে ৬ হাজার ৪শ’ বস্তা সার ছিল। ট্রলার চালকসহ তিনজন শ্রমিক নদী সাঁতরে তীর উঠতে পারলেও ট্রলার ও সার রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
সোমবার (২২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার খোদাবকস এলাকার সন্ধ্যা নদীতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিপন কুমার সাহা।
তিনি জানান, ট্রলারটিতে সরকারি সার ছিল এটুকু নিশ্চিত হতে পেরেছি। তবে ট্রলার মালিক বা শ্রমিকদের সাথে কথা না হওয়ায় বিস্তারিত বলতে পারছি না।
প্রত্যক্ষদর্শী মাসুদ রানা ও কাওছার বালী বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমরা নদীর পাড় থেকে দেখতে পাই সবুজ রঙ করা একটি ট্রলার ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে। ট্রলারে থাকা শ্রমিকরা কতক্ষণ চেষ্টা করছিলেন ডুবে যাওয়া ঠেকাতে। কিন্তু তারা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। আধা ঘন্টার মধ্যে ট্রলারটি সম্পূর্ণরুপে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যায়।
তখন ট্রলার চালক ও সাথে থাকা দুইজন শ্রমিক নদী সাতরে তীরে উঠে আসেন। দুপুরের পর ট্রলারটি যেখানে ডুবে আছে সেখানে একটি বাঁশ পুতে দিয়েছে যেন অন্য কোন নৌ-যান দুর্ঘটনার শিকার না হন। এই প্রত্যক্ষদর্শী দুইজন বলেন, আমরা জেনেছি ট্রলারটির তলা ফেটে পানি ঢুকে ডুবে যায়।
বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ৫০ কেজি ওজনের ৬ হাজার ৪শ’ বস্তা সার ছিল ট্রলারটিতে। যশোর জেলার নোয়াপাড়া অভয়নগর থেকে বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর গুদামে সারগুলো নেওয়া হচ্ছিল। পানিতে ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে সারগুলো গুলে নষ্ট হয়ে গেছে। আর ট্রলারটিও পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়ে গেছে নদীতে।
এই কর্মকর্তা বলেন, সন্ধ্যায় মালিকপক্ষ থানায় এসেছেন। তারা জানিয়েছেন ট্রলারে যারা ছিল তারা অক্ষতভাবেই নদীতীরে উঠতে পেরেছেন। আগামীকাল ট্রলার উত্তোলনের জন্য কাজ শুরু করবেন। নদীর পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়া সারের মূল্য কত তা সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা বলতে পারবেন উল্লেখ করে ওসি বলেন, সরকারি গুদামে ব্যক্তি মালিকানার সার রাখা হয় না। ট্রলার মালিক আমার কাছে জানিয়েছেন ট্রলারে থাকা সার সরকারি।
বানারীপাড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র মনির হোসেন বলেন, ডুবে যাওয়া ট্ররারটির অবস্থান শনাক্ত করে রাখা হয়েছে। দিগন ছাড়া উদ্ধার কাজ শুরু করা যাবে না।
উজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ তৌহিদ বলেন, শিকারপুর গুদামে কোন সার আসছিল এমন কোন তথ্য আমার কাছে নেই। এমনকি ট্রলার ডুবিতে সরকারি সার ডুবে গেছে এমন তথ্যও আমার জানা নেই। আমার মনে হয় এই সার ব্যক্তি বা বেসরকারি কোন আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের।
উপজেলা গুদামে সাধারণত এত বেশি বস্তা সার বরাদ্দ দেওয়া হয় না। তারপরও খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হচ্ছি। ওদিকে ট্রলার মালিকের মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। জানা গেছে ট্রলার মালিকের বাড়ি বাগেরহাট জেলায়।