ই-পেপার

২০ মাস পর চালু হলো শেবাচিমের বার্ণ ইউনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: December 29, 2021

চিকিৎসক না থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটটি ১৯ মাস ২৬ দিন বন্ধ ছিল। এর ফলে দক্ষিণাঞ্চলের আগুন বা গরম পানিতে ঝলসে যাওয়া রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়।

অতপর বন্ধ থাকা সেই ইউনিটটি বুধবার থেকে ফের চালু হয়েছে। একই দিন সকালে যোগদান করেছেন ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ডা. শরিফুল ইসলাম। ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছেন তিনি। তবে ইউনিটটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করতে আরও চিকিৎসক এবং দক্ষ জনবল প্রয়োজন বলে মনে করেন ওই চিকিৎসক।

জানা গেছে, ‘২০১৫ সালের ১২ মার্চ শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পূর্ব পাশের বর্ধিত ভবনের নিচ তলায় ১০ শয্যার বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট চালু হয়। চাহিদা বেশি থাকায় কিছুদিনের মধ্যে ইউনিটটি ৩০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ওয়ার্ড পরিচালনার দায়িত্ব পান সহকারী অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান।

বছর খানেক পর ডা. হাবিবুর রহমান অবসরে যান। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাখাওয়াত হোসেনকে বরিশাল শেবাচিমের বার্ন ইউনিটে পদায়ন করা হয়। কিন্তু তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেননি।

পরে সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. একেএম আজাদ সজলকে দায়িত্ব দেয়া হয় শেবাচিমের বার্ন ইউনিটের। ২০২০ সালে ২৮ এপ্রিল নগরীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ডা. একেএম আজাদ সজলের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। একমাত্র চিকিৎসকের মৃত্যুতে চিকিৎসক শূন্যতায় একই বছরের ১৫ মে শেবাচিমের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।

সব শেষ ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক রোগী দগ্ধ হলে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ঢাকার ৭ জন চিকিৎসক শেবাচিমে দগ্ধ রোগীদের আপদকালীন সেবা দেন। রোগীদের অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তারা গত মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকায় ফিরে যান।

এমন পরিস্থিতিতে শেবাচিম হাসপাতালের বর্ন ইউনিটটি পুনরায় চালুর দাবি তোলেন দক্ষিণাঞ্চলবাসী। এমনকি এ নিয়ে জাতীয় এবং স্থানীয় গণমাধ্যম, টিভি চ্যানেলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরপরই নরেচড়ে বসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সবশেষ মঙ্গলবার বার্ন ইউনিটে স্থায়ীভাবে একজন বার্ন বিশেষজ্ঞ পদায়ন করা হয়। বুধবার তিনি যোগদানের পর কাজও শুরু করেছেন। তবে দগ্ধ রোগীদের পূর্ণাঙ্গ সেবা পেতে আরও দক্ষ চিকিৎসকসহ জনবল দরকার বলে জানান এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই আমরা ইউনিটটি চালুর জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখে আসছি।

নতুন চিকিৎসক যোগদানের কারণে এখন বরিশাল অঞ্চলের বার্নের রোগীর চিকিৎসা সেবা আরও সুবিধাজনক হবে। তাছাড়া পুর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিটের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন