ই-পেপার

মোবাইলে গেম খেলতে না দেওয়ায় খুন হয় স্কুলছাত্র শান্ত

শফিক ‍আজাদ, ভাণ্ডারিয়া | আপডেট: December 4, 2021

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় খাল থেকে উদ্ধার হওয়া ১৪ বছরের কিশোর শান্ত হাওলাদারের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সহপাঠিকে মোবাইল ফোন না দেওয়ার ঠুনকো কারণেই খুন হতে হয় তাকে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আবির নামের অপর এক সহপাঠিকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য বেরিয়ে আসে।

এর আগে গত গত ৩ ডিসেম্বর বিকালে উপজেলার ২নম্বর নদমূলা শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের নদমূলা গ্রামের একটি ডোবা (খাল) থেকে শান্ত হাওলাদার (১৪) নামের ওই স্কুলছাত্ররে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে নদমূলা গ্রামের মো. লোকমান হাওলাদারের ছেলে এবং নদমূলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে শুক্রবার রাতে ভাণ্ডারিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। থানা পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আবির হাওলাদার (১৪) নামের কিশোরকে আটক করে। সে নদমূলা গ্রামের কালাম হাওলাদার এর ছেলে এবং নিহত শান্ত হাওলার সহপাঠি।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, শান্ত হাওলাদার বৃহস্পতিবার বিকালে বাড়ী থেকে বের হয়ে আর ঘরে ফিরে আসেনি। শুক্রবার বিকালে স্থানীয়রা নদমূলা গ্রামের জাকারিয়া হাওলাদার এর বাড়ী সংলগ্ন একটি ডোবা থেকে ছেলেটির মরদেহ দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।

ছেলেটিকে নিজের গেঞ্জি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাষরোধ করে হত্যা করে লাশ গুমের উদ্যেশে ওই ডোবার কাদা মাটির মধ্যে আংশিক পুতে রাখা হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

পুলিশের একটি বিশ্বস্থ সূত্র জানায়, শান্ত হাওলাদারের মোবাইল ফোনটি গেম খেলার জন্য চেয়েছিল সহপাঠী আবির। ফোন না দেওয়ায় আবির ক্ষুব্ধ হয়ে নিজের গেঞ্জি দিয়ে শান্তর গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে ডোবার কাদা মাটির মধ্যে আংশিক পুতে রাখা। এসময় আবির ছাড়াও আরও কয়েকজন সেখানে ছিলো বলেও সূত্র জানিয়েছে। তবে তাদের কারও নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

এদিকে, এ ঘটনার পরে পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মঠবাড়িয়া-ভাণ্ডারিয়া)সার্কেল মো. ইব্রাহীম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি তদন্ত সাপেক্ষে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

ভাণ্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাসুমুর রহমান বিশ্বাস জানান, পুলিশ শুক্রবার শান্ত হাওলাদার এর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ পিরোজপুর মর্গে প্রেরণ করে। শনিবার মার মৃতদেহের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়।

ভাণ্ডারিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মেহেদি হাসান জানান, এ ঘটনায় নিহতর বাবা শুক্রবার রাতে অজ্ঞাত নামা ব্যক্তিদের আসামি করে ভাণ্ডারিয়া থানা হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ আবির হোসেন নামে এক কিশোরকে আইনের সহিত সংঘাতে জড়িত থাকার অপরাধে গ্রেফতার করে শনিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন