নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: January 18, 2022
অনুমোদনহীন ও ড্রাম চিমনি’র ইটভাটা বন্ধ করে দেয়ার পর ফের চালু করা হয়েছে। বনের গাছ আর নদীর চরের মাটি কেটে পোড়ানো হচ্ছে ইট। ঘটনাটি ঘটেছে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায়।
অভিযোগ উঠেছে উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম মাহফুজুল আলম লিটন ইটভাটার মালিক হওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরিবেশ অধিদপ্তরের বন্ধ করে দেয়া ইটভাটা পুনরায় চালু করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, বন্ধ করে দেয়া ইটভাটা পুনরায় চালু করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা গেছে, সাধারণ মানুষের জমি দখল করে অবৈধ্য ভাবে গত দুই বছর যাবৎ ইটভাটা চালিয়ে আসছে উপজেলা চেয়ারম্যান মাহফুজুল আলম লিটন। ভূক্তরা প্রতিবাদ করলে নির্যাতনের শিকার হতে হয় লিটন বাহিনীর হাতে।
অপরদিকে গত ১৫ জানুয়ারি শনিবার বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা কাজিরহাট থানার পশ্চিম মঙ্গা গ্রামে অভিযান চালিয়ে আলম ব্রিসকসহ বেশ কয়েকটি অবৈধ্য ইটভাটা উচ্ছদ করে সিলগারা করে দেয়। এর পরদিন অর্থাৎ ১৬ জানুয়ারি পুনরায় সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে ড্রাম চিমনি’র অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম চালু করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান।
স্থানীয় ফারুক হোসেন ভূলু হাওলাদার ও হানিফ হাওলাদার বলেন, আমাদের জমিসহ এলাকার অনেকের জমি দখল করে এ কে এম মাহফুজুল আলম লিটন গত দুই বছর আগে আলম ব্রিকস নামে একটি ইট ভাটা পরিচালনা করে আসছে। আমরা একাধিকবার বাধা দিয়েছি। কিন্তু তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। যার কারণে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতেও ভয় পায়। এ ব্যাপারে কাজিরহাট থানায় একটি মামলা করলেও লিটন ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক মো. আবদুল হালিম বলেন, আমরা মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাট এলাকার আলম ব্রিকসসহ বেশ কয়েকটি ইটভাটায় ১৫ জানুয়ারি অনুমোদনহীন হওয়ায় ভেঙে, জরিমানা করে বন্ধ করে দিয়েছি। তার পরেও যদি কেউ চালু করে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনআনুক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষেয়ে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাবেক আন্দারমানিক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সদ্য বহিস্কৃত নেতা এ কে এম মাহফুজুল আলম লিটনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ড্রাম চিমনি ব্যবহার করায় শুধু জরিমানা করেছে। বন্ধকরার কোন নির্দেশনা নেই। আপনী ভালোভাবে আমার বিষয়ে যানেন বলে ফোন কেটে দেন চেয়ারম্যান লিটন।
অপরদিকে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুননবী বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে বন্ধকরে দেয়া অবৈধ ও কাঠ পোড়ানো ড্রাম চিমনি ব্যবহার করা ইটভাটাগুলো চালু করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এটা অতিশিঘ্রই করা হবে।
বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রায় ৩০০ অধিক ইটভাটা রয়েছে। এরমধ্যে জিগজ্যাক প্রায় ২০০টি এবং পুরাতন ফিক্সড পদ্ধতি ২৮টি ও সনাতনী পদ্বতির ড্রাম চিমনি রয়েছে বিভিন্ন স্থানে। যার হিসাব বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরে নেই। বরিশাল জেলায় প্রায় ২০০টি জিগজ্যাগ ইট ভাটার মধ্যে ১০৩টির পরিবেশ ছাড়পত্র রয়েছে আর বাকি ৭৬টির নেই। এছাড়া জেলায় প্রায় একশর মত পুরাতন ফিক্সড চিমনি ইটভাটা ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ড্রাম চিমনি রয়েছে।