নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: November 25, 2021
বরিশালে একশ মণ জাটকা জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) রাত ১২টার পরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ভোলার রাস্তার মুখে অভিযান চালিয়ে এ জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চত করে নৌ-পুলিশ বরিশাল অঞ্চলের পুলিশ সুপার কফিল উদ্দিন জানান, জব্দকৃত জাটকা অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
তবে পুলিশের অভিযানের বিষয়ে কিছুই জানে না মৎস্য অধিদফতর জানিয়ে বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা আনিসুর রহমান তালুকদার বলেন, মৎস্য অধিদফতরকে না জানিয়ে অভিযান চালানো কিংবা মাছ বিতরণের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না নৌ-পুলিশ।
এদিকে, মাছ নিতে আসা মানুষদের ওপর নৌ-পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে দেখা গেছে। তবে পুলিশ তা অস্বীকার করেছেন। বরিশাল সদর নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছুটিতে থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই নূরুল আমীন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার পরে কুয়াকাটা-বরিশাল মহাসড়কের ভোলার রাস্তার মুখে অভিযান চালিয়ে ট্রাকভর্তি জাটকা জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) বেলা ১১টার পর থেকে জব্দকৃত মাছ অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয়। এ ঘটনায় পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ার বাসিন্দা হাসান সিকদার (২৮) ও গলাচিপা উপজেলার বাসিন্দা নান্নু মৃধাকে আটক করা হয়েছে। তিনি জানান, মাছগুলো কলাপাড়া থেকে বরিশাল পোর্টরোডে আসছিল।
সুর্নিদিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালালে একটি ট্রাক ও কয়েকটি বাস থেকে একশ মণ জাটকা জব্দ করা হয়। সাথে মৎস্য ব্যবসায়ী শাহীন জানান, জাটকার সঙ্গে অন্যান্য মাছ থানায় নিয়ে আটকে রাখে। সেগুলো দুপুর দেড়টার দিকে আমাদের দিয়েছে। ফলে অধিকাংশই পচে গেছে। জাটকার পাশাপাশি বড় সাইজের ইলিশ মাছও ছিল। যেগুলো শিকার করা অবৈধ নয়। সেগুলোও বিলিয়ে দিয়েছে।
সরেজমিনে বেলা সাড়ে ১১টায় দেখা গেছে, মাছ বিতরণের খবর পেয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে দুই শতাধিক মানুষ ভিড় করেছ থানার গেটে। লাইনে দাঁড় করিয়ে মাছ বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া মাছ প্রত্যাশী অনেকের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
মাছ নিতে আসা হারুণ বলেন, পুলিশ অনেককে পিটিয়ে আহত করেছে। আমাকেও কয়েকবার ধাওয়া দিয়েছে। পড়ে গিয়ে পা কেটে গেছে। গরিব মানুষকে মাছ না দিয়ে পুলিশ তাদের পরিচিত লোকজনকে মাছ দিয়েছে। গরিব মানুষ কাছে গেলেই পিটিয়ে বের করে দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ইউসুফ হোসেন বলেন, থানার মাঝি পরিচয় দেওয়া অলি, কালামসহ আরও কয়েকজন কনস্টেবলের সহায়তায় কিছু মাছ লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। তবে সাংবাদিকরা আসার পরে সেগুলো মাছ মালিকের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, অভিযান চালিয়ে জাটকা জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। জব্দকৃত মাছের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মতামত দরকার হয়। এ ছাড়া এবারে অভিযানের বিষয়ে আমাকে কিছুই জানায়নি নৌ-পুলিশ।