নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: September 1, 2022
সারা দেশের সাথে একযোগে বরিশালেও ওএমএস কার্যক্রমের আওতায় খোলা বাজারে ভর্তুকিমূল্যে চাল এবং আটা বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যোনে বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসান এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী দিনে বিভাগের ৩৬টি ডিলার পয়েন্টে ৩০ টাকা মূল্যে চাল এবং ১৮ টাকা কেজি দরে আটা বিক্রি করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু উদ্যানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম- বিপিএম (বার) এবং বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারসহ খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, উদ্বোধন পরবর্তীতে বেলা ১২টায় বরিশাল সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে ওএমএস এবং খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন বিভাগীয় এবং জেলা প্রশাসন।
এসময় বিভাগীয় কমিশনা আমিন উল আহসান সাংবাদিকদের জানান, ‘গোটা বরিশাল বিভাগে চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলার অংশ হিসেবে সারাদেশে চালের মূল্য স্থিতিশীল রাখা ও নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বল্প মূল্যে খাদ্য সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার চলমান ওএমএস কার্যক্রমের আওতা সম্প্রসারণ করেছে। যা আজ থেকে একটানা আগামী তিনমাস ধরে চলবে।
এর ধারাবাহিকতায় বরিশাল মহানগরীসহ বিভাগের ছয়টি জেলায় ৩৬টি ডিলার পয়েন্টের স্থলে ১৫৪ জন ডিলারের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাসহ উপজেলা ও জেলাগুলোতে ৩০ টাকা কেজি দরে ভোক্তাদের মাঝে চাল ও ১৮ টাকা কেজি দরে আটা বিক্রি করা হবে। যেখানে ডিলার প্রতি ২ মেট্রিকটন করে প্রতিদিন গোটা বরিশাল বিভাগে ৩০৮ মেট্রিকটন চাল প্রদান করা হচ্ছে। একজন ক্রেতা দৈনিক ৫ কেজি চাল ক্রয় করতে পারবেন। এতে করে বরিশাল বিভাগে দৈনিক ৬১ হাজার ৬শত জন স্বল্প আয়ের মানুষ সুলভ মূল্যে চাল ক্রয়ের সুযোগ পাবেন।
এছাড়া আটার মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১১ জন ডিলারের মাধ্যমে ১৮ টাকা কেজি দরে আটা বিক্রি হবে। যেখানে প্রত্যেক ডিলার প্রতিদিন ৫ শত কেজি করে মোট ৫.৫০০ মেট্রিকটন আটা সরবরাহ করবে। একজন ক্রেতা দৈনিক সর্বোচ্চ ৩ কেজি আটা ক্রয় করতে পারবেন। এছাড়া টিসিবির কার্ডধারীরাও চাল ও আটা ক্রয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
এছাড়া সারাদেশে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৫ টাকা কেজি দরে নির্ধারিত কার্ডধারীদের মাঝে প্রতিমাসে ৩০ কেজি হারে চাল বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যে কার্যক্রম আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে এই কার্যক্রম।
বিভাগীয় কমিশনার জানান, পুরো বরিশাল বিভাগে তালিকাভুক্ত ভোক্তা ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৪৯৩ জন। খাদ্য বান্ধব ডাটাবেজে যাচাই সম্পন্ন হওয়া প্রকৃত সুবিধাভোগীরা এ কার্যক্রমের আওতায় খাদ্যশস্য উত্তোলন করতে পারবেন। বরিশাল বিভাগের ৪২টি উপজেলার ৩৬০টি ইউনিয়নে এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। বিভাগে খাদ্য বান্ধব খাতে প্রতি মাসে মোট ১৪৬০৬.৭৯০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ হবে। ওএমএস ও খাদ্যবান্ধ্য কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে খাদ্য বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় জন প্রতিনিধি সম্মিলিতভাবে কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, সাংবাদিকদের সাথে মতিবিনিময় সভায় সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১১ টি ডিলার পয়েন্টের স্থলে ২১টি ডিলার পয়েন্ট করা হয়েছে জানিয়ে বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দান বলেন, ‘বরিশাল সিটি কর্পোরেশনসহ জেলায় ১১টি ডিলার পয়েন্টের স্থলে বর্তমানে ৪৮ জন ডিলারের মাধ্যমে ৩০ টাকা কেজি দরে ভোক্তাদের মাঝে বিক্রি করা হচ্ছে।
যেখানে বরিশাল জেলায় দৈনিক ১৯ হাজার ২ শত জন স্বল্প আয়ের মানুষ সুলভ মূল্যে চাল ক্রয়ের সুযোগ পাবেন। একইসাথে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৫ টাকা কেজি দরে ১ লাখ ৬০ হাজার ৭৩৪ জন নির্ধারিত কার্ডধারীদের প্রত্যেকের মাঝে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল বিক্রি করা হবে।