বিএসএল নিউজ ডেস্ক | আপডেট: January 10, 2022
আরও দুটি অভিযোগে মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক নেতা অং সান সু চিকে দোষী সাব্যস্ত করে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১০ জানুয়ারি) দেশটির সামরিক বাহিনী-পরিচালিত আদালত এই সাজা ঘোষণা করেছেন।
গেল বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাকে উৎখাত করে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটির ক্ষমতা দখল করে তাতমাদো নামের সেনাবাহিনী। এরপর থেকে তিনি আটক রয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে এক ডজনেরও বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মধ্যে দুর্নীতি, সরকারি গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। যদিও সমালোচকেরা বলছেন, এসব অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা। তিনি যাতে ফের ক্ষমতায় ফিরে আসতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতেই মামলা দেওয়া হয়েছে।
এবার লাইসেন্স ছাড়া ওয়াকিটকি রাখায় তাকে দুবছর ও করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করায় আরও দুবছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের রুদ্ধদ্বার আদালতে সু চির বিচার চলছে। তার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ আনা হয়েছে, তাতে যদি তিনি দোষী সাব্যস্ত হন, তবে বাকি জীবন তাকে কারাগারেই কাটাতে হবে। অর্থাৎ এসব মামলায় তার ১০০ বছরের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে।
সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দেশটির সাবেক এই স্টেট কাউন্সিলর।
এর আগে গত ডিসেম্বরে উসকানি দেওয়া ও কোভিড-১৯ প্রটোকল লঙ্ঘনের দায়ে তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয় মিয়ানমারের সামরিক আদালত। পরবর্তীতে অভ্যুত্থান নেতা মিন অং হ্লাইং তার অর্ধেক সাজা ক্ষমা করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, গৃহবন্দি থেকে তাকে সাজা ভোগ করতে হবে।
আটকের পর মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এই নেত্রীকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। সাংবাদিকদের আলাদতে যেমন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, তেমনি সু চির আইনজীবীরাও সংবাদমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দিতে পারছেন না।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মিয়ানমার বিষয়ক গবেষক ম্যান্নি মুয়াং বলেন, জান্তা নিজেদের অস্তিত্বের ন্যায্যতা দিতে যেসব কারসাজি করছেন, এটি তার আরেকটি নমুনা।
২০২০ সালের সাধারণ নির্বাচনে সু চির পপুলার ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) ভূমিধস বিজয় অর্জন করে। সামরিক বাহিনীর অভিযোগ, ভোটে জালিয়াতি করে তার দলকে বিজয়ী করা হয়েছে।
অভ্যুত্থানের পর এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৪০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সামরিক বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৪০০ বিক্ষোভকারী।