নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: November 11, 2021
বরিশাল নগরীতে তিন চাকার যাত্রীবাহী যানে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য চলছে। গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে সিএনজি, অটো এমনকি রিকশা চালকরাও। ডিজেলচালিত যানবাহনের ভাড়া বৃদ্ধির সুযোগে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে।
এর ফলে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষ। গ্যাস চালিত যানের ভাড়া বাড়ানো হয়নি বলে জানিয়েছে বিআরটিএ। তবে সুষ্ঠু নজরদারি বা তদারকির অভাবে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে তিন চাকাবিশিষ্ট যানবাহনে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত সোমবার ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির সরকারি ঘোষণার সাথে সাথেই বাড়তে শুরু করে বরিশালের যাত্রীবাহী পরিবহনের ভাড়া। বিশেষ করে তিন চাকার যানের ভাড়া বেড়েছে ৫০ শতাংশ হারে। সিএনজি চালিত অটোরিকশায় ন্যূনতম ভাড়া ১০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্যাডেল চালিত রিকশার ভাড়া বেড়েছে আরও বেশি। ফলে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে।
যাত্রীরা বলেন, নগরীর ব্যস্ততম এলাকা রূপাতলী এবং নথুল্লাবাদ পর্যন্ত সিএনজিসহ ও গ্যাসচালিত অন্যান্য অটোরিকশায় পূর্বের ভাড়া ছিল ১৫ টাকা। এখন তা বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে। হাতেম আলি কলেজ চৌ মাথা থেকে লঞ্চঘাট পর্যন্ত পূর্বের ভাড়া ১০ টাকার স্থলে ১৫ টাকা, লঞ্চঘাট থেকে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ৫ টাকার ভাড়া বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হচ্ছে।
অপরদিকে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে হাতেম আলি কলেজ চৌমাথা পর্যন্ত আগের ভাড়া ছিল ১০ টাকা, এখন নেওয়া হচ্ছে ১৫ টাকা, আর রূপাতলী থেকে নথুল্লাবাদ পর্যন্ত ১০ টাকার স্থলে আদায় করা হচ্ছে ২০ টাকা।
এভাবে প্রায় প্রতিটি রুটেই সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে চালকরা নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া বাড়িয়ে নিয়েছে। এসব রুটের যাত্রীরা যেখানেই নামুক না কেন তাদের কাছ থেকে কমপক্ষে ১০ টাকা করে আদায় করছেন চালকরা। ভাড়ার এমন অসামাঞ্জস্যতা নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত।
এদিকে প্যাডেল (পায়ে) এবং ব্যাটারি চালিত রিকশার ভাড়া বেড়েছে সীমাহীন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে চালকরা আদায় করছেন ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া। নিরুপায় যাত্রীদের বাধ্য হয়ে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ।
আলাপকালে বেশ কয়েকজন যাত্রী জানান, সিএনজি গ্যাসের দাম না বাড়লেও চালকরা এর দোহাই দিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। দাবিকৃত অর্থ না দিলে শিকার হতে হচ্ছে নাজেহালের। আর রিকশাওয়ালাদের যেন পোয়াবারো। কোন কারণ ছাড়াই তারা বাড়তি ভাড়া দিতে যাত্রীদের বাধ্য করছে। এমন অব্যবস্থাপনা রোধে সংশ্লিষ্টদের নজরদারির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সিএনজি এবং গ্যাসচালিত অটোরিকশার চালকরা জানান, নগরী এলাকার একজন চালককে প্রতিদিন মালিককে ৯০০ এবং ৫০০ টাকা করে দিতে হয়। আর দৈনিক গ্যাস প্রয়োজন হয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকার। কিন্তু গ্যাসের দাম বেড়ে গেছে। তাই বাড়তি ভাড়া নিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
ব্যাটারি এবং প্যাডেল চালিত রিকশা চালকরা জানান, বাজারে সবধরনের পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। মালিকরাও তাদের দৈনিক আদায়কৃত অর্থের (জমা) পরিমান বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাই যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নেয়া ছাড়া উপায় নেই।