নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: April 3, 2023
বরিশালের পোর্টরোড এলাকায় কীর্তনখোলা নদীর তীরে পড়ে আছে শত শত পঁচা তরমুজ। যা এখন গবাদি পশুর খাবারে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে বড় লোকসান এড়াতে বাজারে অপরিপক্ক তরমুজ কেটে বিক্রি করা হচ্ছে পানির দামে।
পোর্টরোড সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদী এবং জেলখালের প্রবেশ মুখে দেখা গেছে, হাজার হাজার পিস বড়-ছোট আকারের তরমুজ পানিতে ভাসছে। ফেলে দেয়া তরমুজের স্তুপ জমে আছে নদীর তীরে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এসব তরমুজ ওপর থেকে ভালো দেখালেও ভেতরে নষ্ট হয়ে গেছে। কয়েক দিন আগে এসব তরমুজ মোকামে বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন বরগুনা, ভোলা ও পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলার চাষিরা।
মোকামের আড়তদাররা জানিয়েছেন, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বরগুনা ও ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানের ক্ষেত পানিতে ডুবে থাকায় ভেতরে পঁচন ধরেছে তরমুজগুলো। চাষিরা এসব তরমুজ বরিশালে নিয়ে আসার পর অল্প সময়ের ব্যবধানে তরমুজগুলো পঁচে গেছে। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের।
বরিশাল নগরীর সর্ববৃহৎ পোর্টরোডের ফলের আড়তে দেখা গেছে, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনা থেকে তরমুজবাহী ট্রলার আসছে মোকামে। এখান থেকেই ট্রাকে করে পাঠানো হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
মোকামে তরমুজ বিক্রি করতে আসা ভোলার চরফ্যাশনের কৃষক সাহেব আলী জানান, ‘তার দুই একর জমিতে এবার তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা ছিল ভালো লাভ হবে। কিন্তু কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে সেই আশা নিরাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নগরীর কলাপট্টির পাইকারী ফল বিক্রেতা মো. জীবন বলেন, ‘গত কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে তরমুজ ক্ষেতে পানি জমে গেছে। তাই পরিপক্কতার আগেই তরমুজ কেটে বাজারে নিয়ে আসছে চাষিরা। এতে কয়েক দিনের মধ্যে বাজারে দামও কমে গেছে।
তিনি জানান, বর্তমানে ১০ থেকে ১২ কেজি ওজনের একশো পিস তরমুজের পাইকারী দাম ১৩ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা। সে হিসেবে প্রতি পিস তরমুজের দাম দাঁড়ায় ১৩০ টাকা।
এছাড়া প্রতি একশত পিস ছোট আকারের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে চার হাজার টাকায়। মাত্র কয়েকদিন আগেও ছোট আকারের এই তরমুজগুলো প্রতি একশত পিস সর্বনিম্ন ৪ থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। এখন ছোট আকারের যে তরমুজগুলো বিক্রি হচ্ছে তার বেশিরভাগই অপরিপক্ক। ভেতরে তেমন লাল হয়নি এবং স্বাদও ভালো নয়।
বরিশাল কৃষি অফিস জানিয়েছে, এ অঞ্চলের প্রায় ৬৪ হাজার হেক্টর জমিতে অন্তত ২৭ লাখ টন তরমুজের ফলন হয়েছে। ভালো ফলনে কৃষকদের লাভ হওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে সব শেষ।