নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: November 29, 2021
বরিশাল জেলার অন্যতম শষ্য উৎপাদনকারী উপজেলা আগৈলঝাড়ায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমের শুরুতেই মাঠে নেমেছেন চাষীরা। বীজতলা প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দোলন চন্দ্র রায় জানান, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে মোট ৯ হাজার ৪শ ৫০ হেক্টর জমি ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চালের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫১ হাজার ৯শ ৭৫ মেট্রিক টন।
তিনি জানান, উপজেলায় মোট আবাদী জমির মধ্যে ৯হাজার ১শ হেক্টর জমিতে হাইব্রীড ধান ও ৩৫০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফসী) বোরো ধান আবাদ করা হবে। এর মধ্যে অন্তত ৩শ হেক্টর জমিতে আগাম বোরো আবাদ করবেন চাষীরা। আগাম বোরো চাষের জন্য ২০ হেক্টর জমিতে বীজতলা করেছেন চাষীরা।
উপজেলার কৃষকরা এবার উৎসাহ উদ্দীপনায় ইরি-বোরো আবাদ শুরু করেছেন। জমি প্রস্তুত করতে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক-কৃষাণীরা। জমিতে পানি সেচ, হালচাষ, সার প্রয়োগ, বীজ উঠানো ও প্রস্তুতকৃত জমিতে চারা রোপণ করার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন তারা।
এদিকে, সকালের শীত উপেক্ষা করে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইরি-বোরোর জমি প্রস্তুত ও চারা রোপণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। কেউ বা জমিতে হাল চাষ দিচ্ছেন। কেউ আবার সেচের জন্য ড্রেন নির্মাণ এবং পাম্প বা শ্যালো মেশিনের জন্য ঘর তৈরি করছেন। অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। আনুষাঙ্গিক কাজ শেষ করে কেউ বা আবার বীজতলা থেকে চারা তুলে তা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গৈলা ইউনিয়নের চাষী জহিরুল ইসলাম বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হয়েছে। এবার আমন চাষ করে আমরা লাভবান হয়েছি। সেই আশায় পুরোদমে আবার ইরি-বোরো আবাদ শুরু করেছি।
বাকাল গ্রামের চাষী নাছির ফকির বলেন, অন্যান্য বছর কোল্ড ইনজুরিতে পচন লেগে বীজ ধানের চারা নষ্ট হয়ে যেতো। কিন্তু এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো চারাও বেশ ভালো হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা জানান, ৪ হাজার ৮ পরিবারকে ২ কেজি করে ৯ হাজার ৬শ কেজি হাইব্রীড ধানবীজ এবং ১ হাজার জনকে ৫ কেজি করে উফসী ধানবীজ বিতরণ চলমান রয়েছে। উফসী চাষীরা সরকারি প্রণোদনা হিসেবে বীজের সাথে ড্যাপ সার ১০ কেজি ও এমওপি ১০ কেজি সার সহায়তা পাবেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনেরও আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায়।